Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Headline

Notice: To read this website in your country's language, please change the language. Contact us for advertising: +8801516332727 (What's App) Thank you.

সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে কে বেশি লাভবান


মোঃ রিসালাত মীরবহর।। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি দেশই তাদের নিজের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আত্মরক্ষার জন্য সামরিক খাতে বিপুল পরিমান বাজেট বরাদ্দ করে থাকে। সে দিক থেকে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে প্রতিবছর তাদের সামরিক খাতে অর্থবরাদ্দের চিত্র বেশ উর্দ্ধগামী। বিশেষ করে আধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন সমরাস্ত্র ক্রয় ও তৈরিতে তারা প্রতিযোগীতায় নামছে প্রতিনিয়ত। কার কাছে আত্মরক্ষার জন্য কত বড় ও নিখুত প্রযুক্তি রয়েছে সেটিই বিবেচ্য বিষয়। কারণ প্রত্যেকটি পরাশক্তিই তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এমন প্রতিযোগীতার সূচনা করছে। আজ কথা বলবো সম্প্রতি সময়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে।

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে অস্ত্রধারীদের হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর ভারত অনেকটা নড়েচড়ে বসে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানে একপ্রকার আগ বাড়িয়ে হামলার ছক কষে ফেলে। আমরা যদি একটু বোঝার চেষ্টা করি যে, কাশ্মীরের ভারত নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পহেলগাঁওয়ে  অস্ত্রধারীদের যে হামলা হয়েছে তার দায় ইসলামাবাদের উপর চাপিয়েছে দিল্লি। কিন্তু এর দু’দিনের মাথায় পাক নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অংশে অস্ত্রধারীদের হামলার ঘটনা ঘটে এবং সেখানে বেশ কয়েকজন মানুষ হতাহত হয়। তখন কিন্তু পাকিস্তান এ দায় দিল্লির উপর চাপায়নি। উল্টো দিল্লি পহেলগাঁওয়ে অস্ত্রধারীদের হামলার ঘটনায় পাকিস্তানে হামলার জন্য একপ্রকার তোড়জোর করে। প্রথমে বিষয়টি নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে হুশিয়ারির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তীতে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে ধারাবাহিক ভাবে হামলার মধ্যে দিয়ে পহেলগাঁওয়ের ঘটনার প্রতিশোধ নেয় ভারত। যে অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘সিঁদুর’।

একটি দেশে হামলার আগে অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়। যেমন: আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার, যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি, বেসামরিক মানুষের হতাহতের বিষয়টি মাথায় রাখতে হয়। কিন্তু তার কোনটির তোয়াক্কা করেনি নরেন্দ্র মোদীর দেশ ভারত। বিষয়টি শুধু ভারতের দিক থেকে নয় বরং অন্য যে কোন দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের হামলার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ভারত পাকিস্তানের যে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে সেখানে অনেক বেসামরিক লোক  হতাহত হয়েছে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার বরাতে দেখা গেছে মুসলমানদের মসজিদ গুলোতে হামলা করা হয়েছে। পাকিস্তান বরাবরই দাবী করে আসছিলো কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের হামলার সাথে তারা জড়িত নয়। কেননা পাকিস্তান নিজেই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গ্রুপের অস্ত্রধারীদের হামলার স্বীকার হয়ে আসছে। যা বরাবরই পাকিস্তান কে একপ্রকার অস্থিতিশীল করে রেখেছে।

পাকিস্থানের ৯টি স্থানে হামলার পর ভারত তার নিজের দেশে হাই এলার্ট জারী করে। কারণ ভারত এটা ভেবেছিলো পাকিস্তান প্রতিশোধ নিতে হামলা করবে। কারণ হেলগাঁওয়ের হামলার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ভারত পাকিস্তানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হেনেছে। তবে ভারতের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ভারতের সবচেয়ে ব্যায়বহুল অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান রাফাল সহ প্রায় ৭টি যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। যা ভারতের জন্য এক প্রকার চপেটাঘাত। এছাড়া একদিনে পাকিস্তানের হামলায় ভারতীয় ৫০ সেনা সদস্য হারায় ভারত। যা ছিলো মোদী সরকারের জন্য আরেকটি ব্যার্থতা। দু’দেশের মধ্যে তখনও থেমে থেমে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ‍দুটির যুদ্ধের বিষয়ে সাফ জানিয়ে দেয় তারা ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের বিষয়ে কোন ভূমিকা রাখবে না। এটা দেশ দুটির অভ্যন্তরীন বিষয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের ৩টি সেনাঘাটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। যাতে ব্যবহার করা হয় ড্রোন ও মিসাইল।

পাকিস্তান মূলত যুদ্ধ এড়াতে চেয়েছিলো। কারণ প্রথম থেকে পাকিস্তান আত্মরক্ষার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখানে একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধটা শুরু হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। সেনাঘাটিতে ভারতের হামলা কে প্রতিহত করতে পেরেছিলো ইসলামাবাদ। কিন্তু এবার শাহবাজ প্রশাসন এর একটি শক্ত জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। সাথে দেশটির জনগনও চাইছে ভারতের এমন ন্যাক্কার জনক হামলার উচিত জবাব দিতে। গত বৃহস্পতিবার পাক বিমানঘাটিতে ভারতের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান শুক্রবার সকালে ‘বুনিয়ান মারসুস’ নামের অভিযান শুরু করে ভারতে। এতে পাকিস্তান ভারতের ৩৬টি লক্ষ্যবস্তুতে নিখুতভাবে হামলা চালায়। 

বিশেষ করে ভারতের উধমপুর, পাঠানকোট, গুজরাট, রাজস্থান বিমানঘাঁটি এবং ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের গুদামে হামলা চালায় পাকিস্তান।পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের ফাতেহ-১ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে উধমপুর বিমানঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছে তারা এবং উরি অঞ্চলের একটি ভারতীয় ব্রিগেড সদর দপ্তর ও রসদ ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে ভারতের বিদ্যুৎ গ্রিডের ৭০ শতাংশ অকেজো করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান বিমানবাহিনী দাবি করেছে, তাদের জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমান থেকে উৎক্ষেপিত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ভারতের এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া এডাম্পুর এয়ারবেস, ভাতিন্ডা, হালওয়ারা এবং সিরসা এয়ারফিল্ডেও হামলা চালানো হয়েছে।

পাকিস্তানের এই হামলার পর ভারতের একেবারেই নাজেহাল অবস্থা। বিশেষ করে সোস্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানের এই হামলার পর বেশ কিছু ভিডিও বের হয়। তাতে দেখা যায় ভারতের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর পরপরই ভারতীয় উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মার্কিন প্রশাসনের সাথে যুদ্ধ বন্ধের জন্য যোগাযোগ করতে শুরু করে। এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বিরতীর ঘোষণা দেয়। এখানে একটি বিষয় না বললেই নয়, মার্কিন প্রশাসন প্রথম দিকে বলেছিল ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের বিষয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। এ কথা বলার কারণ তারা হয়তো ভেবেছিলো যেহেতু পাকিস্তানি ৩টি বিমান ঘাটিতে ভারত হামলা চালিয়েছে তাই ভবিষ্যতে আরও বিমান ঘাটিতে হামলা অব্যাহত রাখতে পারবে নয়া দিল্লি। কিন্তু পাকিস্তান ভারতের ৩৬টি লক্ষ্যে হামলা চালানোয় সবকিছু পাল্টে যায়। ফলে মার্কিন প্রশাসন এখন আর আগের মতো বলছে না যে, তারা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে আর নাক গলাবে না।

পাকিস্তান বিমান বাহিনী অত্যন্ত সফলতার সাথে ভারতে অভিযান পরিচালনা করেছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে লাভবান হয়েছে চীন। কারণ চীন দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে বিভিন্ন অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিলো। কিন্তু এসব অস্ত্র ব্যবহারের কোন স্থান পায়নি চীনা কর্তৃপক্ষ। এবারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ‘সিঁদুর’ অভিযানের মধ্যদিয়ে চীনের জন্য সে সুযোগ তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনা অস্ত্রের দাপট দেখতে পেল বিশ্ব। এটা এখন পরিস্কার যে, চীনের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ যে কোন দেশকে নাস্তানাবুদ করতে যথেষ্ট। ভারত যদি কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে পাকিস্তানে হামলা করে তাদের দৌড় দেখার পরীক্ষাও নেয় তবে সে পরীক্ষা ভারতের জন্য এক প্রকার তীক্ত অনুভূতি তৈরি করা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। 

আগ বাড়িয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলতে গিয়ে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানী আর দেশটির বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসাবশেষ ছাড়া তেমন কিছুই প্রাপ্তী জোটেনি মোদীর ‘সিঁদুর’ অভিযানে। অদূর ভবিষ্যতে ভারত কোন দেশের বিরুদ্ধে এমন সামরিক অভিযান পরিচলনা করার ক্ষেত্রে অন্তত আরও বেশ কয়েকবার ভাববে।

তাই আমরা একথা নিশ্চিত ভাবে বলতেই পারি, সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলায় চীনের ভূমিকা অত্যন্ত বড় একটি প্রভাব বিস্তার করেছে। শুধু তাই নয় সাথে এটাও পরিস্কার যে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় চীন একটি শক্তিশালী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। যা সি জিংপিং এর দেশ চীনকে দিন দিন এক প্রকার অপ্রতিরোধ্য করে তুলছে। অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের অন্যান্য পরাশক্তি দেশগুলো নিশ্চয়ই চীনকে সমীহ করে চলবে। বিশেষ করে দক্ষিক-পূর্ব এশিয়ার বিরোধ পূর্ণ অঞ্চল কোরীয় উপদ্বীপ, দক্ষিণ চীন সাগর সহ তাইওয়ান প্রণালীতেও চীনা গতিবিধি আরও সতর্কতার সাথে পর্যালোচনা ও মূল্যায় করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো।

Risalat Mirbahar
International political analyst, Bangladesh

Writer & Editor। Obalardak
E-mail: obalardak@gmail.com
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +88 01516332727 (What's App)
☛ অনুগ্রহ করে অন্যান্য সেবা পেতে ভিজিট করুন: (Click)
Tags