
মোঃ রিসালাত মীরবহর।। রাজনৈতিক বিষয় তেমন ভালো বুঝিনা। তবে শেখার তো আর কোন বয়স নেই। দেখলাম সবাই মানে আমাদের উৎসুক জনতারা রাজনৈতিক বিষয়ে খুব পারদর্শী। সেদিক দিয়া বিবেচনা করলে আমি খুবই নগণ্য। তাই রাজনৈতিক বিষয়ে একটু আধটু ধারণা নেওয়াার জন্য আমিও একটা দলের সদস্য ফরম পূরণ করতে চাই। যদি আপনারা আমারে একটু সহযোগীতা করেন আরকি। বোঝেনই তো সবাই রাজনীতি করে কিভাবে বিদেশ পারি জমায়। মেলা টাকা হবিনে।
একটি গণতান্ত্রিক দেশে আমারও তো কিছু চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি যেভাবে একটি রাজনৈতিক দল খুজছি সেভাবে ঠিক পাচ্ছি না। শুনলাম অনেক রাজনৈতিক দল নতুন ভাবে নিবন্ধন করিছে। তাদের আলাদা আলাদা মতাদর্শ। অনেক দলের নামও জানিনা। ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা কোন দলে যাবো। নিচে আমার পছন্দের দলের মধ্যে যে গুণাবলি থাকতে হবে তা উল্লেখ করলাম। যদি সেগুলো পড়ে মনে হয় দেশের চলমান কোন একটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সেসব গুনাগুন গুলো আছে তাইলে পরে দয়া করে পত্রের মাধ্যমে হলেও একটু জানাবেন। আমি তাইলে সেই রাজনৈতিক দলের সদস্য ফরম পূরণ করবো।
যেমন রাজনৈতিক দল চাই আমার:
সীমিত দলীয় কার্যক্রম: যাদের দলীয় কার্যক্রম খুব সীমিত থাকবে। অর্থাৎ যাদের মূল কার্যক্রম হবে জনগণের জীবন মান উন্নয়ন। বুঝলেনা তাইতো, আচ্ছা বুঝাইয়া বলি। ধরেন বর্তমানে যে আধুনিক মালেশিয়া দেখতেছেন এর আগে মালেয়শিয়া কিন্তু ব্রিটিশের অধীন্যাস্ত ছিল। ঐটা কিন্তু এত আধুনিক ছিল না। ঐটার দায়িত্বে আসেন এক ভদ্রলোক। ঐ ভদ্রলোকের নাম মাহাথির মোহাম্মদ। যিনি আধুনিক মালেয়শিয়ার রূপকার। দেখছেন কিভাবে একটা দেশের নের্তৃত্ব দিতে হয়? মালেয়শিয়ার তো বাংলাদেশের চেয়েও অবস্থা খারাপ ছিলো। আর আজ আমার দেশের মানুষ যায় সেখানে কাজ খুজতে। বুঝলেন কিছু?
অরাজনৈতিক কার্যকলাপ: সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে যে রাজনৈতিক দলের মধ্যে নিম্নে উল্লেখিত বিষয়গুলো থাকবে না। যেমন: বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ, পরিবারতন্ত্র, কুশাসন, তদবির বাণিজ্য, ঘুষ প্রথা, টেন্ডারবাজি, চাঁদা তোলা, অন্যায়ভাবে কারও ক্ষতি করা, নয়ছয় করে জমি দখল ইত্যাদি। এমন রাজনৈতিক দলের সন্ধান থাকলে আমারে জানাবেন। আমি ফরম পূরণ করবো।
ক্ষমতা ত্যাগের মনোভাব: রাজনৈতিক দলের মধ্যে ক্ষমতা ছাড়ার মনোভাব থাকতে হবে। খুব কঠিন কথা মনে হচ্ছে। আচ্ছা বুঝাইয়া কই। মানে হইলো ধরেন একটি রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করলো তার মধ্যে কেউ কেউ দূর্নীতি তে জড়াইয়া পড়লো। তাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তবে তাদের পদত্যাগের মানসিকতা থাকতে হবে অথবা জোর করে হলেও পদত্যাগ করানো লাগবে। জাপান দেখতেছেন না। আমাগো বন্ধু রাষ্ট্র। বাংলাদেশে কিন্তু তারা মেলা টাকা দেয়। এদেশের প্রধান অনুদান দাতা দেশ। জাপানের জাইকা বাংলাদেশে অনেক অর্থায়ন করে। এদেশের বিভিন্ন ইনফ্রাক্টাকচার বানায়। ও আমি আবার ভালো ইংরেজী জানি না। কোন মতে টাইনা টুইনা পাশ দিছি। ইনফ্রাক্টাকচার অর্থ হলো অবকাঠামো। গুগলে সার্চ দিয়া ইংরেজীটা বাইর করলাম আরকি। যাই হোক এই জাপানে সকালে একজন প্রধানমন্ত্রী বিকালে আরেকজন। এজন্যই তারা পৃথিবীর মধ্যে এত উন্নত। যাদের গড় আয়ু পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আপনার আমার তো টেনশনে ঘুম নাই কাইল সকালে আবার না জানি কেডায় জমি দখল দেয়?
ভোট কেনাবেঁচা: দেশে কোন রাজনৈতিক দলের ভোট কেনা বেঁচার সিস্টেম চালু রাখা যাবে না। যার ভোট সে দেবে, যারে খুশি তারে দিবে। একবার এক রিকশাওয়ালারে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই ভোট কারে দিছেন। উনি জানাইলো ভাই যে টাহা দেছে হেরে দিছি। জিজ্ঞাস করলাম কত দিছে? কয় ২০০ টাহা দিছে। এই টাকার জন্য আপনি আপনার মাথা বিক্রি করে দিলেন? সে জানাইলো হয়, কি করমু কন এরপর তো আর কেউ আমারে আর জিগােইবোও না। নগদ যা পাইলাম আরকি? আবার একদিন সামনে পড়লো তারে দেহি ঘুরতাছে। জিগাইলাম কি হইছে ভাই? জানাইলো ভাই ইউনিয়ন পরিষদে ঘুরতেছি। কেন কি হইছে? ভাই একটা কাজ করানো লাগবে কিন্তু টাহা চায় মেলা। আমি কইলাম কেন আগে ২০০ নিছেন না হের লগে পুরাইয়া দিয়ে দেন। লোকটা ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আপনারা বুঝছেন কিছু?
ভালো মানুষের গ্রহণযোগ্যতা: শিক্ষিত ও মার্জিত লোক ছাড়া নির্বাচনে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ যিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তিনি হবেন অত্যন্ত সৎ, জনবান্ধব। যার মোট সম্পত্তির হিসাব উল্লেখ করে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। যদি কখনও তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তবে তারে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ও ভাবছেন আমি পগলের মতো প্রলাপ বকতাছি। চীনের নাম শুনছেন? আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলছেন, যদি শিক্ষা গ্রহণ করতে সুদূর চীনে যেতে হয় তাহলে সেখানে যাও। পৃথিবীতে এত দেশ থাকতে নবী চীনে যাইতে কইলেন কেন? কারণ চীন কখনও দূর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। সেখানে কেউ দূর্নীতি করে পার পায় না। ডাইরেক্ট লটকাইয়া দেয়। কিছু বুঝলেন? চীন কেন এত উন্নত?
জনবান্ধব প্রশাসন: প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে জনবান্ধব। যেন দেশের কোন মানুষ সরকারি সেবা নিতে গিয়া হয়রানির স্বীকার না হয়। প্রয়োজনে প্রতিটি দপ্তরে অভিযোগ বক্স আর সিসিটিভি থাকবে। চীনে তো সে ব্যবস্থা আছে। শুধু চীনে না বিশ্বের অনেক দেশেই এমন ব্যবস্থা আছে। না থাকার কারণে কি হয় একটু বলি। উদাহরণ দিচ্ছি আরকি। কেউ আবার গায় মাখাইয়েন না। এক জেলে তার মাছগুলারে তরতাজা রাখতে ফরমালিন মিশাইছে, চরা দামে বিক্রি করছে দুই দিনের মাথায়। এক্কেবারে তাজা মাছ। মাছটা কিনছে এক সরকারি লোক। ওনার বউ তো আগুন। মাছ কাটতে গিয়া দেহে পঁচা মাছ। সরকারি লোক তো ক্ষেপে আগুন। উনি গেলেন অফিসে। গিয়া দেহেন এক দুধ ওয়ালা আসছে তার কাছে একটা কাজে। উনি মোটা টাকার বিনিমনে কাজটা দুধওয়ালার করে দিলেন। দুধওয়ালা আবার হারানো টাকার জন্য গরুর দুধে বেশি বেশি পানি দিতে শুরু করেন। ঐ সরকারি লোকের বউ আবার ঐ দুধওয়ালার কাছ থেকে গরুর দুধ কেনে। সরকারি লোক যখন আম দুধ দিয়া খাইতে বসে তখন গরুর দুধে স্বাদ পায় না। সে তখন বউয়ের সাথে খেচর খেচর করে। ওদিকে মাছ ওয়ালা আবার যায় চুল কাটতে নাপিতের কাছে। নাপিত কেচিতে দুই টাক দিয়া কয় চুল কাটা শেষ। অহন টাকা দেন। কিছু বুঝলেন? দিন শেষে কেউ ভালো নেই। আর এসব চোর বাটপার টাউট কোন দল তৈরি করে না জানাবেন। আমি ফরম পূরণ করে সদস্য হবো।
আগে নিজেদের ভালো হতে হবে: আমাদেরও ভালো হতে হবে। এতো খাই খাই থাকলে হয় না। দেশটা এমন একটা জায়গায় গেছে যে যেখানে পায় সে সেখানে খায়। খাইতে খাইতে গলায় ঘাঁ বানাইয়া ফালাইছে। মানে বুঝলেন না? আগে তো মানুষ মারা যাওয়ার একটা সম্ভাব্য বয়স ধরা হতো। যেমন: ৬০-৭০ বা ৮০ বছরে মারা যাইবে। কিন্তু অহন তার আগেই মারা যায়। কি সমস্যা? কয় স্ট্রোক, কিডনিতে সমস্যা, লিভার শেষ, লানচে সমস্যা, হার্ট আর পারে না। ও ভাই এত খাইয়া যদি শরীর সুস্থ না থাকে তবে সে খাওন খাইয়া লাভ কি? আমার কথা বুঝেন নাই? আমি এমন কিছু মানুষ দেখছি যাদের মধ্যে খাই খাই নাই। তারা দিব্বি সুস্থ্য আছে। শরীরে তাদের কোন রোগ শোক নাই। এরা ঘুষ খায় না, সুদ খায় না, অবৈধ সম্পদ অর্জন করে না। আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছে। এখনও ছিনা টান টান করে রাস্তায় হাটে। মনে হয় যেন মার্শালাট করতে যাইতাছে। কি বুঝলেন?
সর্বদলীয় সিদ্ধান্ত: যে দল অন্য দলগুলোরে নিয়া একসাথে বইসা সংসদের সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। দেশের জন্য কোনটা ভালো কোনটা খারাপ তা সব দলের অংশগ্রহণে নিশ্চিত হওয়া লাগবে। মানে বুঝছেন? সরকার দলীয় একক সিদ্ধান্তই শেষ কথা না। মানে আগে তো হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে হ্যাঁ জয়যুক্ত হইছে। কাউরে আর জিগান লাগে নাই। অটো পাশ। সেখানে সবার মতামতের ভিত্তিতে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় সেখানে ভুলের পরিমাণ কম থাকে। আর দেশও এগিয়ে যেতে পারে। এরকম মানসিকতার দল আছে কোনটা জানাবেন? আমি ফরম পূরণ করে সদস্য হবো।
ব্যবস্থার পরিবর্তন: কেউ খাবে তো কেউ খাবে না তা হবে না তা হবে না। আপনি দেশের টাকা মেরে দিয়ে গাড়ি বাড়ি করবেন আর কেউ রাস্তায় পরে থাকবে সেই ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। আমার দেশের প্রতিটি তরুণদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করা লাইগবে। যাতে তারা তাদের পরিবার পরিজন লইয়া ভালো থাকতে পারে। যাতে তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা কইমা আসে। বেকারত্ব না থাকে। যাতে তারা দেশকে এগিয়ে নিতে পারে। আমার দেশের সাওয়ালরা অন্য দেশে গিয়া কেন চাকুরী খুজবো। এমন কিছু করা লাইগবে যাতে এই দেশে থাইকা সবাই সেই আগের মতো পেট ভইরা মাছ আর ডাল দিয়া ভাত খাইতে পারে। যারে কয় মাছে ভাতে বাংলাদেশি। সেই যুগ ছিল সোনালী যুগ। আবার চাই সেই সুদিন।
দলীয় সমালোচনা: নিজের দলের সমালোচনা করার সুযোগ থাকতে হইবে। ধরেন দল যদি একটি ভুল সিদ্ধান্ত নেয় তবে তার সমালোচনা যেন দলীয় নেতা-কর্মীরাই করতে পারে। তাতে যেন কোন অসুবিধা না হয়। মানে হুমকি ধামকি না দেওয়া হয়। আমরাতো আবার সবাই নেতা। মানে আমার এলাকায় একবার এক নেতা আইসবে। সবাই লাইন ধইরা দাড়াইয়া আছে। তা আমি রাস্তাদিয়া হইটা যাইতেছিলাম। আরও অনেকে যাচ্ছিল। তা আমারে দেইখা সেই নেতা মানে পাতি নেতা বয়স ধরেন আমার ছোট ভাইয়ের বয়সি। বলে সরেন সরেন নেতা আসতেছে। দেহেন না সব খালি করতেছি। সে লেখাপড়া করে নাই। সুযোগ ছিল তার লেখাপড়ার। এজন্য কারে কি কইতে হয় বোঝে না। অল্প বয়স রক্ত গরম, নেতা আইসবে বলে সে নিজেকে নেতা ভাবতেছে। সে হয়তো অহনো নেতার অপেক্ষায় আছে। এক নেতা আসবে আরেক নেতার পা ধরবে। আর আমি নেতার অপেক্ষায় থাকি না। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। এরকম পাতি নেতা যাদের মিনিমাম কোন যোগ্যতা নাই তারা কোন দলে নাই জানাইয়েন। আমি ফরম পূরণ করে সদস্য হবো।
অধিক রাজনৈতিক চর্চা: এত রাজনৈতিক চর্চা করা ভালো না। সবকিছুতে এত রাজনীতি হইলে সে দেশ আগাতে পারে না। আমাদের এই দেশটা ছোট দেশ। মাত্র এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার পাঁচশত সত্তর বর্গ কিলোমিটারের একটা দেশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে জনবহুল দেশ এটি। নানান সমস্যা এখানে। ক্ষুধা, দারিদ্রতা, বেকারত্ব, অধিক জনসংখ্যা, বণ্যা, খড়া তো আছেই। তার মধ্যে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। শুনছি সিকিমে নাকি মাটির নিচের প্লেট ফাইটা রইছে। দেশকে উন্নত করতে অইলে সবাইরে আগাইয়া আসতে হইবে। ব্যাক্তিচিন্তা, ব্যাক্তিস্বার্থ বাদ দিয়া গণ মানুষের চিন্তা করতে হইবে। তাইলে দেশ ঐ মালেশিয়ার মতো হইবে। কি কিছু বুঝলেন?
Writer & Editor। Obalardak
E-mail: obalardak@gmail.com
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +88 01516332727 (What's App)
Mobile: +88 01516332727 (What's App)