লক্ষণসমূহ: উল্লেখিত লক্ষণগুলো একজন কোল্ড এলার্জি রোগীর জন্য খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। তবে কোল্ড এলার্জিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এসকল সমস্যা বেশ প্রকট আকার ধারণ করে। শুধু তাই নয় রোগী অসুস্থ্যতায় ভোগেন এবং বেশ অস্বস্তিতে পড়ে যান। বিশেষ করে সামান্য বাতাসেও রোগীর সর্দি-কাশি কিংবা হাচি লেগেই থাকে। এছাড়া পরিবর্তিত আবহাওয়ার কারণে রোগীর ত্বকেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে অ্যালার্জির সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের এ সময় ত্বকে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্বকের শুষ্কতার পাশাপাশি রোগীরা এসময় চুলকানিও অনুভব করেন। শীতকালে কোল্ড এলার্জির সমস্যা বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে ঠান্ডা লাগার কারণে। তবে অন্যান্য সময়েও কোল্ড এলার্জির সমস্যা থেকেই যায়। অ্যালার্জি বা কোল্ড অ্যালার্জিতে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে আরও যে সকল উপসর্গগুলো দেখা যায় সেগুলো হলো ঘন ঘন হাঁচি, গলা খুসখুস করা, নাক দিয়ে পানি পড়া, কানে অস্বস্তি, চোখে জ্বালা ভাব, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, হালকা জ্বর, ত্বকে সংক্রমণ ইত্যাদি। তবে শুধু ঠান্ডার মাধ্যমেই কোল্ড এলার্জতে মানুষ আক্রান্ত হয় না। বরং ধূলা-বালি ও ময়লা যুক্ত স্থানের মাধ্যমেও যে কেউ এতে আক্রান্ত হতে পারে।
প্রতিকার: কোল্ড এলার্জি একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। যার প্রতিকার পাওয়া বেশ কঠিন। তবে সময়মতো এর চিকিৎসা করালে কোল্ড এলার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে গেলে লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনতে পারলে কোল্ড এলার্জি সমস্যা থেকে অনেকটাই ভালো থাকা যায়। বিশেষ করে কিছু কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে পারলে কোল্ড এলার্জি সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। নিচে কোল্ড এলার্জি সমস্যা থেকে প্রতিকার পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
ঠান্ডা থেকে দূরে থাকুন: কোল্ড এলার্জিতে আক্রান্ত ব্যাক্তিকে অবশ্যই ঠান্ডা লাগানো থেকে বিরত থাকতে হবে। যাতে করে ঠান্ডা জনিত সমস্যার কারণে রোগটি বৃদ্ধি পেতে না পারে। বিশেষ করে শীতকালে গরম কাপড় পড়তে হবে। কোন ভাবেই যাতে ঠান্ডা না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঠান্ডার মধ্যে খালি পায়ে হাটা যাবে না। এছাড়া খুব বেশি আক্রান্ত হলে আঁদা দিয়ে গরম পানি অথবা চা খাওয়া যেতে পারে। এতে অনেকটাই সুস্থ্য অনুভব করা যায়। এছাড়া ফ্রিজের খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি কোল্ড এলার্জি সমস্যাকে আরও বাড়িতে দিতে পারে।
অভ্যাসের পরিবর্তন:কোল্ড এলার্জি থেকে বাঁচতে রোগীর খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আনতে হবে। বিশেষ করে যে সকল খাবারে এলার্জি বৃদ্ধি পায় সে খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যেমন: বেগুন, গরুর গোস, মসুর ডাল ইত্যাদি খাবার একটু কম খেতে হবে। এছাড়া পারফিউমের ঘ্রাণ, মসলার ঘ্রাণ, ফুলের রেনুর ঘ্রাণ সহ অন্যান্য ঘ্রাণ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা রুমের মধ্যে এসি ব্যবহারে অভ্যস্ত তাদের এসির বাতাস খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। এছাড়া স্যাত স্যাতে জায়গায় থাকার অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে।
ময়লা থেকে দূরে থাকুন: দৈনন্দিন জীবনে নানা প্রয়োজনে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। তাই যেসকল জায়গায় ধূলা বালি রয়েছে সে সকল জায়গাগুলো এড়িয়ে চলাই উত্তম। কারণ ধূলা বালি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে নাকের ভিতরে প্রবেশ করে কোল্ড এলার্জির সমস্যা তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে বিভিন্ন কল-কারখানার সাধারণ মানুষ ধূলা বালির কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত নানা শরীরিক সমস্যায় ভোগেন। তাই প্রয়োজনে কর্মক্ষেত্রে যাতে ধূলা বালি প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এ সকল ধূলা বালিযুক্ত স্থান যতটা এড়িয়ে চলা যায়।
রুম খোলামেলা রাখা: কোল্ড এলার্জি প্রতিরোধে বাসস্থানের রুম খোলামেলা রাখা, বিশেষ করে রুমের দরজা ও জানালা খুলে রাখা যাতে করে রুমের মধ্যে পর্যাপ্ত আলো বাসাত প্রবেশ করতে পারে। কারণ ঘরে রোদ বা সূর্যের আলো ঢোকার সুযোগ না পেলে রোগীর অ্যালার্জির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া শীতের পোশাক বা কম্বল, লেপ এ জাতীয় পোশাক আলমারি থেকে বের করেই ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এতে ত্বকে সংক্রমিত হয়ে অ্যালার্জির সংক্রমণ আরও বেড়ে যায়। তাই এসব পোশাক ব্যবহার করার আগে ভালো করে রোদে গরম করে ব্যাকটেরিয়া দূর করে তবেই ব্যবহার করা উচিত।
এছাড়া কোল্ড এলার্জি প্রতিকারে হালকা সরিষার তেল বুকে ও পিঠে মালিশ করা যেতে পারে। তাতে শ্বাস-প্রশ্বসের বেশ উপকার পাওয়া যায়। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে চললে কোল্ড এলার্জির সমস্যা থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে। তারপরেও যদি কারও কোল্ড এলার্জির মাত্রা বেড়ে যায় তবে যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা করালে এ সমস্যা নিরাময় করা সম্ভব। তাই সময়মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
Writer & Editor। Obalardak
E-mail: obalardak@gmail.com
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +88 01516332727 (What's App)
Mobile: +88 01516332727 (What's App)