অবেলার ডাক।। সাহিত্য একটি সাধনা। যা মানুষ যুগের পর যুগ ধরে চালিয়ে আসছে। নিজের মেধা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ গল্প লিখছে, কবিতা লিখছে, লিখছে প্রবন্ধ কিংবা ছড়া। এছাড়া নিজ মেধা ও বুদ্ধিতে সমসাময়িক বিষয় থেকে শুরু করে রাজনীতি, অর্থনীতি সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ে বিভিন্ন কলাম লিখছে অনেকেই। এতে করে একদিকে মানুষের বাস্তব চিন্তা ও বিকাশিত মেধা শক্তির দক্ষতা প্রকাশ পাচ্ছে। সেই সাথে উঠে আসছে মাটি ও মানুষের কথা। বাংলা সাহিত্য আজকের এই দিনে যেখানে দাড়িয়ে আছে সেখানে আসতেও কম কাঠখোর পোড়াতে হয়নি। যুগে যুগে বাংলা সাহিত্য বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে। রাজা রামমোহন রায় থেকে শুরু করে ঈশ্বারচন্দ্র বিদ্যাসাগর কিংবা কালীদাস থেকে প্রমথ চৌধুরী সব জায়গায় বাংলা সাহিত্য কে সমৃদ্ধ করতে অসংখ্য লেখক, কবি ও সাহিত্যিক কাজ করে গেছেন নিরলস ভাবে।
এছাড়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লী কবি জসিম উদ্দিন, ফররুখ আহম্মেদ, জীবনানন্দ দাশ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শামসুর রাহমান, যতীন্দ্রমোহন বাগচী, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, সুকান্ত ভট্টাচার্য, নির্মলেন্দু গুণ, আলাউদ্দিন আল আজাদ, হেলাল হাফিজ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, হুমায়ূন আহমেদ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সৈয়দ শামসুল হক, সুকুমার রায়, কবি সুফিয়া কামাল, কামিনি রায় সহ অসংখ্য গুণী কবি ও সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্যকে হৃদয়ে লালন করে সমৃদ্ধ করে গেছেন। আজকে আমরা যে বাংলা সাহিত্য দেখছি তা এসব হারিয়ে যাওয়া গুণী মানুষদের হাতেই লালিত হয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। তাদের অক্লান্ত ধর্য্য ও ভালোবাসার মধ্যদিয়ে বাংলা সাহিত্য এগিয়ে গেছে বলদর্পে। তাই বাংলা সাহিত্যে তাদের এই অবদানকে আজও মানুষ সত্যিকার অর্থে স্মরণ করে।
এ সকল গুণী লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের তখনকার লেখা ও চিন্তা চেতনা শুধু বাংলা সাহিত্যকেই প্রসিদ্ধ করেনি বরং বাংলা সাহিত্যকে আরও ছড়িয়ে দিতে বেশ কাজ করেছে। তাদের লেখনী প্রতিভা যে কত প্রসিদ্ধ ছিল তা আমরা তাদের রেখে যাওয়া লেখার মাধ্যমে বুঝতে পারি। যুগে যুগে তাদের লেখনি কেবলমাত্র বাংলা সাহিত্যকে এগিয়ে নিয়ে যায়নি বরং বিভিন্ন সময়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছে। বিশেষ করে তাদের লেখনীর মাধ্যমে মানুষের কল্যাণের বর্তা ছিল স্পষ্ট। বিভিন্ন বিষয়ে তারা তাদের লেখনীকে সাজিয়েছেন বর্ণীল সব বাংলা শব্দমালা দিয়ে। যা আজও স্মৃতি হয়ে আমাদের কাছে রয়ে গেছে। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার পিছনে তারা যে সময় ও ভালোবাসা বিলিয়ে গেছেন তা আজও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
Artificial Intelligence অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যুগে যুগে মানুষ তাদের নিজ প্রয়োজনে অনেক কিছু আবিস্কার করেছে। যার মধ্যে অসংখ্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে। আবার অকল্যাণও নিহিত রয়েছে। যেমন ধরুন, মানুষ একসময় খনি আবিস্কার করতে গিয়ে পারমানবিক বোমা বানানোর কথা চিন্তা করেছে। আবার সেই পারমানবিক বোমাই মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। আবিস্কার কখনো কখনো মানুষের মঙ্গলের জন্য আবার কখনোবা তা বিপদের কারণ হয়ে দাড়ায়। বর্তমান বিশ্বের আলোচিত আবিস্কারের একটি হচ্ছে AI (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি। আবিস্কারটি দারুন একটি আবিস্কার। বিশেষ করে AI বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তির দ্বারা অনেক কাজ আমরা খুব সহজেই করতে পারছি। কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই তা আমাদের অত্যন্ত নিপুন ভাবে অনেক কাজ করে দিতে সক্ষম। যারা AI বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন তারা জানেন কতটা সহজে একটি কাজ সম্পাদন করা সম্ভব। আর তাই এ প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃত লেখক, কবি ও সাহিত্যিক।
আর AI (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ প্রযুক্তি এবার হানা দিয়েছে সাহিত্যের মাঝে। দেশের বেশ কয়েকটি গনমাধ্যম সহ ইউটিউব, ফেসবুকেও এ বিষয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে একাধীক। এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। কিন্তু তা সত্বেও আমরা ঝুকে পড়ছি এ বিষয়ে। বিশেষ করে অনেকেই এখন AI (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে হরহামেশাই লিখে ফেলছেন কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ কিংবা ছড়া। ফলে তাদের মেধা ও সময় দুটোই কম ব্যবহৃত হচ্ছে। লেখকরা চিন্তা করে মনের মাধুরী দিয়ে যে লেখাটি এতদিন লিখতেন তা এখন খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ কেউ যদি চায় তিনি AI (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কবিতা, গল্প কিংবা ছাড় লিখবেন তা পারছেন। যা আমাদের সাহিত্যের জন্য এক অশনী সংকেত।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ প্রযুক্তি আমাদের লেখনীর ক্ষেত্রে নিজস্ব চিন্তা, চেতনাকে কমিয়ে আনতে সক্ষম। অর্থাৎ আমরা বুঝতেই পারছিনা কোন লেখাটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা সৃষ্ট আর কোন লেখাটি ব্যাক্তি তার নিজের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। কবিতা, ছড়া, গল্প লিখতে গিয়ে আমরা বাংলা সাহিত্যকে যেন AI (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাতে ছেড়ে না দেই। তাহলে তা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরো বেশি AI (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে ঝুকতে বাধ্য করবে। বরং আমরা যারা প্রকৃত লেখক তারা যেন বিষয়টিকে পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়ে নিজ মেধা ও ভালোবাসায় লেখনী প্রস্তুত করি। কারণ একজন প্রকৃত মেধাবী লেখক, কবি কিংবা সাহিত্যিক কখনো AI (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার লেখনী সাজাবে না। এটি মূলত অদক্ষ, প্রতিভাবিহীন মানুষগুলোর মাধ্যমে প্রস্তুত করা সম্ভব। যাদের লেখনী প্রতিভা একেবারে নেই বললেই চলে।
সত্যিকারের যারা পাঠক রয়েছেন তারা অবশ্যই লেখা পড়লে বুঝতে পারবেন কে AI (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে লিখেছেন আর কে তার নিজ মেধায় লিখেছেন। তাই আসুন বাংলা সাহিত্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকি। ভালোবাসি মা ও মাটিকে। নিজ চেষ্টায় যেন আমরা আমাদের সাহিত্য চর্চাকে নিয়ে যেতে পারি এক অবিস্মরণীয় মাত্রায়। যেখানে লেখা থাকবে হাজারো লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের নাম। নিজ চিন্তা ও চেতনার মাধ্যমে আমরা আমাদের বাংলা সাহিত্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবো অনন্য এক জায়গায়। যে লেখায় মানুষের কল্যাণ নিহিত থাকবে।
Risalat Mirbahar
Writer & Editor: Obalardak
E-mail: obalardak@gmail.com,
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +8801516332727 (What's App)
Copyright Ⓒ 2025 । All Right Reserved By Obalardak [Click More]
Writer & Editor: Obalardak
E-mail: obalardak@gmail.com,
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +8801516332727 (What's App)
Copyright Ⓒ 2025 । All Right Reserved By Obalardak [Click More]