Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Headline

Notice: To read this website in your country's language, please change the language. Contact us for advertising: +8801516332727 (What's App) Thank you.

বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে এদেশের তরুণ মেধাবীরা




মোঃ রিসালাত মীরবহর।। একটি দেশে যত বেশি মেধাবী জন্মাবে তত বেশি দেশ উন্নত হবে। কারণ যুগে যুগে মেধাবী তরুণরাই দেশকে একসময় তাদের মেধা, সততা, শ্রম আর বুদ্ধি দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছে। মেধাবী ছাড়া একটি দেশকে কখনও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে মেধাবীদের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে জ্ঞান, বিজ্ঞান, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে মেধাবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে না পারলে দেশি অনেক বেশি পিছিয়ে পড়ে। তাই একথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, আধুনিক যুগে মেধাবী তরুণরাই হচ্ছে দেশের মূল চালিকাশক্তি।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশ থেকে মেধা পাচার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। গত দুই দশকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে তিন গুণ। প্রতি বছর গড়ে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ গমণ করছেন। তাদের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অন্তত ৫৭টি দেশ। বিশেষ করে কেউ পিএইচডি ডিগ্রি, আবার কেউ মাস্টার্স বা অনার্স ডিগ্রি নিতে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। তরুণ মেধাবীদের উচ্চশিক্ষার জন্য এমন বিদেশ গমণ দেশকে মেধাশূণ্য করে দিচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। কিন্তু এসব শিক্ষার্থীরা কেন দেশ ছেড়ে উন্নত দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছেন খুব সহজেই এ প্রশ্ন জাগে সবার মনে।

দেশে উচ্চ শিক্ষা সফল ভাবে সম্পন্ন করলেও যোগ্যতা অনুযায়ী মিলছেনা একটি ভালো চাকরী। এছাড়া আছে বেতন বৈষম্য, আছে দূর্নীতি আর ঘুষ বাণিজ্যের বিনিময়ে চাকরী পওয়ার নিশ্চিয়তা। এছাড়া কর্মস্থলে হয়রানী যেন নিত্য নৈমত্যিক ব্যাপার। শুধু তাই নয় সৎ ও যোগ্য মানুষের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করা বেশ কঠিন একটি বিষয়। কখনও কখনও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভালো উদ্যোগ ও কাজগুলোকে আটকে দেওয়া হয়। যা দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন কে বেশ বাধাগ্রস্থ করে। আছে টাকার বিনিময়ে উচ্চপদে আসীন হওয়ার মতো ঘটনা। ফলে কর্মক্ষেত্রে সৎ ও মেধাবী তরুণদের পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশ প্রকট। সঠিক মূল্যায়নের অভাব, নিরাপদ কর্মস্থলের অভাব, বেতন বৈষম্য সহ নানা কারণে দেশের তরুণ মেধাবীদের কে দেশের প্রতি অনিহা তৈরি করেছে। ফলে তারা দিনদিন কর্মস্থলের জন্য বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।

শুধু তাই নয় তরুণ মেধাবীদের দেশ ছাড়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাড়িয়েছে রাজনৈতিক স্থীতিশীলতা। রাজনৈতি স্থীতিশীলতা না থাকার কারণে দেশের মেধাবীরা তাদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে অনেক বেশি দুঃশ্চিন্তায় ভোগেন। পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়ার ফলে বেকারত্ব শুধু বাড়ছে না বরং এসব তরুণ মেধাবীরা নিজ পরিবারের উপর বোঝা হয়ে যাচ্ছে। ফলে আর্থিক অনাটনে পারিবারিক অশান্তি সহ সঠিক সময়ে নিজ ক্যারিয়ার দার করাতে না পেরে মাদাকাসক্ত হয়ে পড়ছে অনেকেই। এছাড়া চাকরি দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছি দালাল চক্র। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবার তাদের সন্তানদেরকে দেশে রাখতে চান না বলে জানা যায়। অন্যদিকে কর্মস্থলে যারা রয়েছেন দিনের পর দিন তাদের প্রমোশনের জন্য তাকিয়ে থাকতে হয় উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার দিকে। তাদের খুশি করতে না পাড়লে প্রোমোশন যেন সোনার হরিণ।

এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের জন্য সেবামূলক না হয়ে বরং স্বার্থ সংশ্লিষ্টি হওয়ায় অনেক তরুণ মেধাবীদের বেতনের টাকাও খোয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে চাকরি দেওয়ার নাম করে সহজ সরল তরুণদের কাছ থেকে অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে এক থেকে ছয় মাস কর্মস্থলে কাজ করার পর অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতারণায় হারাচ্ছে তাদের মূল পাওনা বেতনের টাকা। লাখো বেকারের মাঝে নিজের জন্য উপযুক্ত চাকরি পাওয়ায় যেন হয়ে গেছে সোনার হরিণের মতো। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলেই খুব সহজলভ্য বেতনে খুজে পাচ্ছে শিক্ষিত তরুণদের। ফলে যারা চাকরিরত অবস্থায় রয়েছে তাদের চাকরি হারানোর ভয় বেশ প্রকট আকার ধারণ করছে। নির্ধারিত পদে কর্মরত থাকলেও পদের বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে অনেক কর্মীদের।

এছাড়া উর্ধতন কর্তৃপক্ষের খেয়াল খুশিমত হুকুম পালন করতে হচ্ছে না চাইলেও। বিশেষ করে অফিসের বাইরে কখনও কখনও বাসার ব্যাক্তিগত কাজেও ডেকে নেওয়া হচ্ছে কর্মীদেরকে। ফলে তরুণ মেধাবীদের জন্য চাকরির সঠিক পরিবেশ পাওয়া অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ছে। সবকিছু জেনেশুনে অনেক তরুণরা তাদের মেধা বিকাশের পথে এসব বিষয়গুলোকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না। ফলে তারা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের চিন্তা করে পারি জমাচ্ছেন উন্নত দেশগুলোতে। যা আমাদের দেশের অর্থনীতি, জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিক্ষা, কৃষি সহ বিভিন্ন শাখায় বেশ প্রভাব ফেলছে। বিদেশে পড়তে গিয়ে তারা একসময় সে উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে দেশে ফেরা তাদের জন্য অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। বরং তারা তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সে দেশেই একসময় সেটেল হয়ে যাচ্ছেন।

প্রযুক্তি দুনিয়ায় নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে অ্যাপলের সর্বশেষ স্মার্টফোন iPhone Air। এটি এখন পর্যন্ত অ্যাপলের ইতিহাসে সবচেয়ে পাতলা আইফোন, যার পুরুত্ব মাত্র ৫.৬ মিলিমিটার। যা অ্যাপলের পুরাতন মডেলগুলোর তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কম। এই অনন্য ডিজাইনের পেছনে রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন তরুণ ডিজাইনার। যার নাম আবিদুর চৌধুরী। ফোনটি Titanium ফ্রেমে তৈরি, সামনে ও পেছনে Ceramic Shield গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে এবং উন্নত প্রযুক্তিতে সজ্জিত থাকায় এটি দেখতে যেমন অত্যাধুনিক, তেমনি ব্যবহারেও শক্তিশালী। যা চমকে দিয়েছে গোটা পৃথিবীকে। অথচ এই তরুণ আমাদের দেশের একজন সম্পদ। কিন্তু হয়তো আমরা তাকে কোনভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। এভাবে অসংখ্য তরুণ মেধাবী রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। যাদের আমরা উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারিনি বলেই আজ তারা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ফলে আমরা হারাচ্ছি প্রচুর বৈদেশিক অর্থ।

একটি দেশের উন্নতির জন্য রাজনৈতিক স্থীতিশীলতা, ঘুষমুক্ত সমাজ, দূর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান, অনিয়ম, বৈষম্য পরিহার, দালাল মুক্ত অফিস, সঠিক নজরদারি, নতুন নতুন কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারত্ব লাঘবে সত্যিকারের কর্মপরিকল্পনা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে তরুণদের কে উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার মধ্য সঠিক কর্মপরিবেশ তৈরি করতে পারলে এদেশের মেধাবী তরুণরা আর বিদেশে পাচার হবে না। ফলে দেশের অর্থনীতির চাকা আরও বেশি সচল হবে। দেশ হবে উন্নত ও আত্মনির্ভরশীল।

আসুন আমরা সকল অনিয়মের বেড়াজাল থেকে আজই মুক্ত হই। আমরা আমাদের দেশকে ভালোবাসি। ভালোবাসি এদেশের মাটি ও মানুষকে। দূর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ি, সুন্দর সমৃদ্ধ জীবন যাপন করি। মনে রাখবেন অনিয়ম, দূর্নীতি কখনও একটি জাতিকে উন্নত করে না। বরং নানা সমস্যাগুলোকে বাড়িয়ে তোলে।

Risalat Mirbahar
Writer & Editor: Obalardak
E-mail:
 obalardak@gmail.com,
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +8801516332727 (What's App)
Copyright Ⓒ 2025 । All Right Reserved By Obalardak [Click More]