Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Headline

Notice: To read this website in your country's language, please change the language. Contact us for advertising: +8801516332727 (What's App) Thank you.

ওভার থিংকিং ইজ নাথিং: মোঃ রিসালাত মীরবহর


মোঃ রিসালাত মীরবহর।। আমরা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মহান আল্লাহ আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে বসবাসের উপযোগী করে পাঠিয়েছেন। যুগে যুগে নবী রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদের পৃথিবীর বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অবগত করেছেন। আজকের পৃথিবীতে মানুষ যা কিছু অর্জন করেছে তা কিন্তু হঠৎ করেই হয়নি। পৃথিবীর বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ আস্তে আস্তে জানতে শুরু করেছে অজনা সব অধ্যায়। আর তাতে সহায়তা করেছেন বিভিন্ন সময়ের অসংখ্য নবীগণ। কারণ মহান আল্লাহ তার প্রেরীত বার্তার মাধ্যমে মানুষকে পৃথিবীর বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন। কোন বিষয়গুলো মানুষের জন্য কল্যাণকর আর কোন বিষয়গুলো মানুষের জন্য অকল্যাণ বয়ে আনে তা মানুষ বুঝতে শিখেছে।

আর তাই আমরা বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আমাদের মস্তিস্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখি। যেমন: সাপ, জোক কিংবা অন্য কোন হিংস্র জন্তু জানোয়ার দেখলে আমরা সতর্ক হয়ে যাই। কারণ আমরা আমাদের ব্রেইনে এগুলোকে আমাদের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে দেখে থাকি। তাই আগে ভাগেই আমরা হয় এগুলোকে মারার চেষ্টা করি অথবা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কারণ আমারা স্পষ্টতই জানি এগুলো সম্ভবত আমাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। আর তাতে আমাদের প্রাণ নাশের সম্ভাবনা অনেকটাই জোড়ালো। এসব চিন্তুগুলো খুবই স্বাভাবিক। কেননা মানুষ তার চলার পথে চিন্তাশীল। চিন্তা করেই মানুষ তার বুদ্ধি দীপ্তির মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাবে এবং চলার সেই পথকে অনেক সহজ ও মসৃণ করে তুলবে। কিন্তু চিন্তারও তো একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে যেটা তাকে সে পর্যন্ত স্বাভাবিক চিন্তা করতে সহায়তা করবে।

কথা বলছি ওভার থিংকিং নিয়ে। আমারা মানুষ হিসেবে অত্যন্ত সচেতন। চিন্তা আমাদের কে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সতর্ক করতে সহায়তা করে। যেমন ধরুন: আমি জানি আমি সাতার কাটতে জানি না। আর তাই যদি আমি নদীতে নামি তাহলে যে কোন সময় আমার মৃত্যুর সম্ভাবনা অত্যন্ত জোড়ালো হতে পারে। বিষয়টি আমাদের ব্রেনে সচেতনতার সিগন্যাল প্রদান করে। যা পূর্ব থেকেই আমাদের বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন করে তুলছে। তাই নদীতে নামার পূর্বে অবশ্যই সাতার কাটা শিখে নদীতে নামার বিষয়ে আমাদের ব্রেইন আমাদের সচেতন করে। যা আমাদের উদ্ভত পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেয়।

কিন্তু যদি এমন হয় যে, আমি নদীতে নামছি না আর সাতারও কাটছি না। কিন্তু নদীর কাছাকাছি গিয়েই আমি চিন্তা যুক্ত হয়ে যাচ্ছি। তাহলে সেটা কে আমরা আমাদের অহেতুক অতিরিক্ত চিন্তা হিসেবে সনাক্ত করতে পারি। যাকে ইংরেজীতে ওভার থিংকিং বলা হয়। ওভার থিংকিং সমস্যা আমাদের মধ্যে অনেকেরই রয়েছে। যা কখনও কখনও আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। যা হয়নি বা ঘটছে না সেটাকে আগাম চিন্তা করে আমরা আমাদের মনের কল্পনা দিয়ে সবকিছু সাজিয়ে নিচ্ছি। ঠিক যেন ক্যানভাসে রং তুলি দিয়ে আঁকা সুন্দর কোন দৃশ্যের মতো। যা আঁকতে আমাদের মনগড়া কল্পনাই যথেষ্ট এবং বাঁধাহীন ভাবে আমরা তা মনের মধ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এঁকে যাচ্ছি।

ওভার থিংকিং আমাদের সাথে তখনই ঘটে যখন আমরা ভবিষৎতের কোন একটি বিষয় নিয়ে অধিক কৌতুহলী বা আগ্রহী হয়ে উঠি। যেমন: আমরা একটি গাড়িতে করে ভূমি থেকে চার তলা সমান উচ্চতায় ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যাচ্ছি। এখন হঠাৎ করে আমাদের ব্রেইন আমাদের অধিক চিন্তা করতে বাধ্য করছে। কেননা এটা ঝুকিপূর্ণ এবং এটাতে কোন ক্রমে গাড়িটি দূর্ঘটনার সম্মুখীন হলে আমাদের জীবন নাশের সম্ভাবনা প্রকট। বিষয়টি ভবিষৎতের একটি সতর্ক বার্তা আমাদের জন্য। কিন্তু বর্তমানে আমরা ফ্লাইওভারে চলমান। ঘটনাটি ঘটছে না কিন্তু আমাদের মধ্যে ঘটনার প্রতিক্রিয়া ঘটছে যা আমাদের একরকম বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।

অথবা ধরুন আমরা ফেরী যোগে গাড়ি পারাপার হচ্ছি। কিন্তু ফেরীতে থাককালীন সময়ে আমরা কোন কারণে মাঝ নদীতে গিয়ে চিন্তা করছি, যদি গাড়িটি এখন এখান থেকে পড়ে যায়? তাহলে আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি সৃষ্টি হবে। ফলে আমাদের ব্রেইন আমাদের সতর্ক করছে। আর তাই আমরা আমাদের প্রাণ বাঁচাতে গাড়িটি ফেরী থেকে পড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে নদীর গভীরে যাওয়ার পর কি কি আমাদের সাথে ঘটতে পারে সে সম্পর্কে অত্যন্ত সুন্দরভাবে আগাম কল্পনা করে যাচ্ছি। শুধু তাই নয়, এখান থেকে বাঁচতে আমাদের করণীয় কি হবে সে বিষয়গুলি নিয়েও ভাবতে শুরু করেছি।

এজন্য কোন একটি সময় এই অতিরিক্ত চিন্তার কারণে আমাদের দম বন্ধ হয়ে আসছে এবং আমরা খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছি। অথচ বিষয়টি আমাদের সাথে আদৌ ঘটেনি বা ঘটছে না বরং আমরা নিরাপদে নিজ গন্তব্যে পৌছে যেতে সক্ষম হয়েছি। এটাকে বলা হয় অতিরিক্ত চিন্তা অথবা অহেতুক চিন্তা। কোন বিষয় সম্পর্কে চিন্তা করা স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা যখন ব্যক্তির চিন্তার স্বাভাবিক স্তর কে অতিক্রম করে তখন তা দুঃশ্চিন্তা বা ওভার থিকিং।

প্রশ্ন আসতে পারে ওভার থিংকিং থেকে কিভাবে আমরা রক্ষা পেতে পারি? যেহেতু এটি আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। প্রথমত আমরা একজন অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারি। এরপর ওভার থিংকিং এর মাত্রা কিছুটা কমে আসলে আমরা একজন অভিজ্ঞ মনোরোগ কাউন্সিলরের মাধ্যমে আমাদের সমস্যাগুলোর সমাধান খুজে নিতে পারি। কাউন্সিলিং একটি খুবই কার্যকরী উপায় যা আমাদের মধ্যে বিরাজমান ওভার থিংকিং থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করতে পারে।

এছাড়া মহান আল্লাহ রাববুল আলামীন পবিত্র কুরআনে কারীমে ইরশাদ করেন- كُلُّ نَفْسٍ ذَآىِٕقَةُ الْمَوْتِ ؕ প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। যে কোন প্রাণীই হোক তার উপর মৃত্যু একবার আসবেই। ভালো হোক খারাপ হোক তাকে মরতে হবেই। এর কোন বিকল্প নেই। আর তাই ওভার থিকিং থেকে মুক্তি পেতে আমরা আমাদের মহান রবের নিকট আত্মসমর্পণ করতে পারি।

অর্থাৎ আমরা যদি একমাত্র মহান আল্লাহকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে পারি এবং আমরা যদি এটা ধরে নেই যে, তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন অতএব আমাদের বেঁচে থাকা কিংবা মরে যাওয়া একমাত্র তারই ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় সংগঠিত হবে। কাজেই আমাদের এই বিষয়গুলো নিয়ে অহেতুক চিন্তিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ একমাত্র তিনিই আমাদের গড়তে পারেন আবার তিনিই আমাদের ভাঙতে পারেন। তাই এখানে আমাদের চাওয়া-পাওয়ার কোন মূল্য নেই। কেননা আমি চিন্তা করলেও বাঁচতে পারব না, আবার চিন্তা করা বন্ধ করলেও মরে যাব না। সো আমার কাছে মনে হয় ওভার থিকিং ইজ নাথিং

Risalat Mirbahar
Writer & Editor: Obalardak
E-mail:
 obalardak@gmail.com,
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +8801516332727 (What's App)
Copyright Ⓒ 2025 । All Right Reserved By Obalardak [Click More]