Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Headline

Notice: To read this website in your country's language, please change the language. Contact us for advertising: +8801516332727 (What's App) Thank you.

খাবার যখন মানুষের মৃত্যু ডেকে আনে


মোঃ রিসালাত মীরবহর।। একটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই খাবার খাওয়া প্রয়োজন। কথায় বলে সুস্থ্য দেহ সুস্থ্য মন এ দুটি হচ্ছে সুখী হওয়ার প্রধান শর্ত। আপনার শরীর ঠিক না থাকলে মন ঠিক থাকার প্রশ্নই আসে না। প্রতিনিয়ত আমরা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করছি। যা আমাদের শরীর কে সচল রাখছে। ফলে আমরা আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম গুলো অনায়াসে করে যেতে পারছি। কিন্তু ধরুন খাবার খেয়ে যদি আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি তাহলে ব্যাপারটা কেমন দাড়ায়? অসুস্থ হলে একদিকে যেমন শরীর খারাপ করে অন্যদিকে শরীর খারাপের পাশাপাশি মনও খারাপ হয়ে যায়। আমি যদি আরেক ধাপ এগিয়ে বলি, সুস্থতা হচ্ছে মহান আল্লাহর একটি বড় নিয়ামত। আমরা যতক্ষণ সুস্থ আছি ততক্ষণ কিন্তু বুঝি না যে আসলে সুস্থতা কত বড় নেয়ামত।

আমরা আমাদের চলার পথে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দোকান থেকে অনেক খাবার কিনে খেয়ে থাকি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হচ্ছে ভাজা পোড়া খাবার খেয়ে। এই ভাজা পোড়া খাবার খেয়ে আমাদের শরীর খুব দ্রুত খারাপ করছে। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা তৈরি হয় না এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুস্কর। কিন্তু বাইরের এসব দোকানের খাবার খেলেই কেন আমাদের এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে? আমার কাছে মনে হয় একই ভোজ্য তেল দিয়ে প্রথমে সকালের নাস্তা তৈরি করা হয়। এরপর সেই তেল দিয়েই সিঙ্গারা, ছামুচা কিংবা রোলের মতো খাবার গুলো পরিবেশন করা হয়। আবার সেই তেল দিয়েই হয়তো দুপুরের সবজি, মাছ, কিংবা গোস রান্না করা হচ্ছে।

এমনকি বিকেল কিংবা রাতের খাবারে বেঁচে যাওয়া তেল দিয়েই খাবার তৈরি করা হচ্ছে। ফলে একই তেল বহুবার তাপ দেওয়ার ফলে তা মানব দেহের জন্য অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ছে। তবে সব দোকানে যে এমনটি করা হয় না এমন নজিরও রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ তার ক্ষুধা নিবারনের উপায় হিসেবে এসব দোকান থেকে খাবার খেয়ে থাকেন। ফলে একসময় দীর্ঘমেয়ায়ী খাবার গ্রহণের ফলে লিভার, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিকস সহ শারীরের নানা জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। এছাড়া অনেক দোকানী রয়েছেন যারা মানসম্মত তেল দিয়ে খাবার পরিবেশন করেন না। ভেজাল ও মিশ্রিত তেল দিয়ে অধিকাংশ সময় খাবার পরিবেশন করা হয়। ফলে অধিকাংশ মানুষ পেটের পীড়ায় ভোগেন।

ফলে দ্রুতই যেতে হচ্ছে ফার্মেসীতে। কিনে আনছেন গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ থেকে শুরু করে পেটের সমস্যা দূর করার জন্য নানা ঔষুধ। এতে করে সাময়িক ভাবে সমস্যার সমাধান হলেও পরিবেশেগত ভাবে তা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। ফলে দিনের পর দিন এমন খাদ্য গ্রহণ করার ফলে মানব দেহে অতিমাত্রায় এর প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে ফার্ষ্টফুড জাতীয় খাবারে দেখা দিচ্ছে নানা জটিল রোগ। তবুও খাবারের প্রতি আমাদের লোভ ও অতিইচ্ছা থেকেই আমরা এমন খাবার খেয়ে যাচ্ছি। শুধু বড়রাই না বরং খাবার খেয়ে অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা ছোটদের মধ্যে আরও বেশি। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ কিংবা রাস্তার ধারে এমন অপরিস্কার, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের খাবার খেয়ে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ছে বিভিন্ন বয়সের বাচ্চারা।

এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি। দেখুন ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। আপনি যদি চান তবে বাইরের খাবার না খেয়েও বেঁচে থাকা সম্ভব। বিশেষ করে ঘরে তৈরি খাবার খেলে তা আপনার শরীরের জন্য অনেকাংশে ভালো। আমাদরে শরীরে এমন কিছু রোগ রয়েছে যা নিয়ন্ত্রণ যোগ্য। যেমন: গ্যাসের সমস্যা। গ্যাসের সমস্যা একটি নিয়ন্ত্রণ যোগ্য রোগ। বিশেষ করে আপনি এমন খাবার থেকে সবসময় বিরত থাকুন যেগুলো আপনার দেহে প্রবেশের সাথে সাথে সমস্যা তৈরি করছে। প্রয়োজনে আপনি নিজ হাতে বাসায় তৈরি করে খাবার পরিবেশন করুন। এতে করে অনেক সমস্যার সমাধান পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া যাদের খাবার বাসায় তৈরি করা সম্ভব নয় তারা এমন দোকান থেকে খাবার কিনে খান যেখানে খেলে আপনার পেটের সমস্যা তৈরি হবে না।

আপনি যদি আপনার পেটে খারাপ খাবার না দেন তবে পেটও আপনাকে খারাপ কিছু দিবে না। আমাদের দেশে প্রতিবছর অনিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণের কারণে শারিরীক নানা জিটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত মানুষের মধ্যে এই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণ ও সময় মতো চিকিৎসা না করানোর ফলে অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। বিশেষ করে ভেজাল খাবার আমাদের শরীরকে শারিরীক ভাবে অসুস্থ করে দিচ্ছে। তাই খাবার গ্রহণ করার আগে অবশ্যই আমাদের অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। এমনকি খাবার পানি বিশুদ্ধ রয়েছে কিনা সে বিষয়েও সচেতন হতে হবে। খোদ রাজধানী ঢাকাতে খাবার পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের ফলে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।

আমরা আমাদের ব্যাক্তি স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভেজাল ও খারাপ খাবার পরিবেশন করে যাচ্ছি। যা জনস্বার্থের পরিপন্থী। মাছওয়ালা মনে করে ফরমালীন মিশালে হয়তো মাছটি তাজা দেখাবে এবং দ্রুত বিক্রি করা সম্ভব হবে। আবার গরুর দুধ বিক্রেতা মনে করে কিছুটা পানি দিয়ে দুধ বিক্রি করলে হয়তো ভালো মুনফা করা যাবে। ফল ওয়ালা ভাবে ফলটি তাজা দেখাতে ক্যামিক্যাল ব্যবহার করলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কম থাকে। এভাবে প্রতিনিয়িত আমরা মানুষকে ভেজাল খাবার পরিবেশন করে যাচ্ছি। অথচ বাস্তব সত্য হচ্ছে মাছ ওয়ালা দুধ বিক্রেতার কাছে, দুধওয়ালা ফল বিক্রেতার কাছে, ফল বিক্রেতা সবজি বিক্রেতার কাছে তার প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে যাচ্ছে। অর্থাৎ দিন শেষে আমরা সবাই সবাইকে প্রতারণার মধ্যে ফেলছি এবং কেউই ভালো থাকছি না।

আসুন মানুষকে ভালোবাসি। মানুষের উপকারে আসি। ভেজাল ও মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর খাবার পরিবেশন না করি। মনে রাখবেন কারও ক্ষতি করে কেউ কখনো সুখে থাকতে পারে না। প্রকৃতি তার পাওনা সঠিকভাবেই বুঝিয়ে দেয়। আগামীর একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ পৃথিবীর বি-নির্মাণের জন্য আমাদের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। আমরা যেন সেগুলো ঠিকঠাক পালন করি। মানবতার কথা বলি, গণ মানুষের কথা বলি। সর্বপরি মানুষের কল্যাণে কাজ করি। আমরা যদি কারও উপকার করতে সক্ষম না হই, তবে যেন কারও ক্ষতি না করি।

Risalat Mirbahar
Writer & Editor: Obalardak
E-mail:
 obalardak@gmail.com,
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +8801516332727 (What's App)
Copyright Ⓒ 2025 । All Right Reserved By Obalardak [Click More]