Hot Widget

Type Here to Get Search Results !

Headline

Notice: To read this website in your country's language, please change the language. Contact us for advertising: +8801516332727 (What's App) Thank you.

আজও কথা বলা শেখা হলো না


মোঃ রিসালাত মীরবহর।। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মহান আল্লাহ মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন অনন্য সব গুণাবলী দিয়ে। যার দ্বারা মানুষ তার সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। মানুষ তার প্রয়োজনে একে অপরের সাথে কথা বলে মনের ভাব প্রকাশের জন্য। আর এতে করে মানুষ একজন আরেকজন সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। কথা বলা হচ্ছে নিজেকে প্রকাশ করার অন্যতম মাধ্যম। আপনি কি চান? আপনার গুরুত্ব কিংবা ব্যাক্তিত্ব সবই প্রকাশ পায় আপনার কথার মাধ্যমে। কথায় বলে বন্দুকের গুলি আর মুখ থেকে বের হওয়া কথা দুটোই সমান। যা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই কথা বলার আগে আমাদের অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত।

যেহেতু কথা বলার মাধ্যমেই মানুষ তার মনের ভাবকে স্বাচ্ছন্দে প্রকাশ করতে পারে তাই কথা বলাকে মানুষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে। আধুনিক যুগে যারা খ্যাতিমান মানুষ রয়েছেন তাদের একটি কথা মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে। ফলে তার এই কথা নিয়ে আলোচনা যেমন একদিকে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে তেমনি তার বিরুদ্ধে সমালোচনারও কোন কমতি থাকে না। অর্থাৎ তার এই কথা বলার মধ্যদিয়ে তার ব্যাক্তি জীবন যেমন প্রকাশ পায় তেমনি জনমত কিংবা জনরোষ তৈরি হয়। কাজেই একটি ভুল কথার মাধ্যমে একজন মানুষ তার ব্যাক্তিত্ব হারায় এ কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। 

ব্যাক্তিগত জীবনে অনেকেই তার নিজ ক্যারিয়ার উন্নত করার বিষয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। হতে পারে তিনি একজন বিখ্যাত চিত্রকার, কিংবা নাট্যশিল্পী, ডাক্তার কিংবা সেচ্ছাসেবী অথবা একজন লেখক, কবি কিংবা সাহিত্যিক বা একজন রাজনীতিবিদ। যে যাই হোক না কেন তার আচার আচারণ কিংবা ব্যবহার প্রকাশ পায় তার কথার মাধ্যমে। বর্তমান সময়ে দিন দিন স্যোসাল মিডিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রচার মাধ্যম। যেখানে মানুষ তার নিজের ভাব প্রকাশ করতে পারে বিনা বাধায়। 

ধরুন একজন মানুষ তার নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি তার ব্যবহারের মাধুর্য্য হারিয়ে ফেলেছেন। হয়তো তিনি কোন না কোন ভাবে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন। যা তার শুভাকাঙ্খীরা পড়ে বা শুনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কথাটি বলার আগে তিনি হয়তো ভাবেন নি বিষয়টি শ্রোতার মাঝে এতোটা প্রভাব ফেলবে। ফলে মানুষের মধ্যে তার এই কথার মাধ্যমে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। যা তার ব্যাক্তি জীবনে বেশ প্রভাব ফেলে।

আবার পারিবারিক জীবনেও ব্যাক্তির কথাগুলোকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ধরুন পরিবারের কেউ আপনার সাথে কথা বলতে গিয়ে এমন সব বাক্য প্রয়োগ করেছে যা আপনার কাছে মোটেও ভালো মনে হয়নি। ফলে তার প্রতি আপনার এক ধরনের মনোক্ষুন্নতা তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাক্তির আচার আচারণ আপনাকে কোন না কোন ভাবে আঘাত দিয়েছে। ফলে আপনি বেশ বিরক্ত মনোভাব পোষণ করছেন তার বিষয়ে। এতে করে পারিবারিক বিবাদ অনেকটা বৃদ্ধি পায় যা জটিলতা তৈরি করতে সক্ষম। যা আমাদের কারও কাম্য নয়। কাজেই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে একে অপরের সাথে সুন্দর ব্যবহার অপরিহার্য।
 
আবার আপনি যদি সামাজিক ভাবে চিন্তা করেন, তবে দেখবেন সমাজে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা হয়তো অযথা আপনার সাথে এক ধরনের খারাপ আচারণের মাধ্যমে আপনাকে প্রচুর বিব্রত করে যাচ্ছে। যে বা যারা এরকম করছে তারা হয়তো বুঝে শুনেই এমন করছে। কিন্তু যে ব্যাক্তিটি এমন খারাপ আচারণে অংশগ্রহণ করলো তার বিষয়ে আপনার বিরুপ প্রতিক্রিয়া হলো। শুধু তাই নয় আপনি ঐ ব্যাক্তি সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারনা পেলেন। তিনি তার আচার ব্যবহারের মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন বা বুঝিয়ে দিলেন আসলে তার পরিচয় কি এবং কেমন?

কথা বলা খুবই সহজ একটি বিষয়। যা মনে আসে তা অন্য মানুষের দিকে ছুড়ে দেই। কিন্তু একবারও ভাবিনা অন্য মানুষটি কি মনে করলো? মূলত কথা বলার মধ্য দিয়েই মানুষ মানুষ কে চিনতে পারে। কে ভালো আর কে খারাপ প্রাথমিক ভাবে তা কথা বলার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। কেননা কথা বলার মাধ্যমে মানুষ খুব সহজেই একে অপরকে আক্রমন করতে পারে। আমাদের ব্যাক্তি জীবন কিংবা পারিবারিক অথবা সামাজিক জীবনে যত সমস্যার তৈরি হয় তার অধিকাংশের জন্য দায়ী অবিবেচনা মূলক কথা বলার কারনে। এখন ব্যাক্তি তার কথা বলতেই পারে কিংবা মত প্রকাশ করতেই পারে। কিন্ত সেটা করতে গিয়ে কারও বিরাগ ভাজন হওয়াটা মূলত একটি পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর।

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা জানি না কিংবা বুঝি না কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়। অথবা কখন কোন উপযুক্ত সময়ে কি ধরনের কথা বলতে হয়। আর এসব আমরা খুব বেশি চর্চাও করি না। সাধারণত আমরা আমাদের মতো করে কথার প্রয়োগ করে থাকি। উদাহরণ স্বরূপ ধরুন, একটি বিমানের বৈমানীক হচ্ছেন আপনি। যেহেতু বিমানটি আপনার আদেশ পালন করে তাই এর সকল দায়ভার আপনার। আপনি ইচ্ছে করলে বিমানটিকে আকাশেও উড়াতে পারেন আবার ইচ্ছে করলে পানিতেও ফেলতে পারেন। এটা আপনার একটি ইচ্ছার স্বাধীনতা।

ঠিক তেমনি কথাবলাও ব্যাক্তির এক ধরনের অবাধ স্বাধীনতা। যা আমরা সবাই ভোগ করছি। কিন্তু এ স্বাধীনতা ভোগ করতে গিয়ে আমরা হয়তো কাউকে কষ্ট দিচ্ছি অথবা অযথা তাকে গালমন্দ শোনাচ্ছি কিংবা পারস্পরিক সম্পর্ক কে ক্ষতিগ্রস্থ করছি। তাই একজন সুন্দর ব্যাক্তি হিসেবে আপনি তখনই সবার কাছে পরিচিত হবেন যখন আপনার কথায় বা ব্যবহারে অন্যরা খুশি হবে। এটা ঠিক যে আমরা আমাদের কথা বলার সময় চিন্তা করি না। কিন্তু এটাও ঠিক যে চিন্তা না করে আমরা আমাদের কথার দ্বারা অন্যের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটাচ্ছি।

তাই কথা বলার পূর্বে অবশ্যই আমাদের অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে। এমন ভাবে কথা বলা যাবে না যাতে করে অন্য মানুষের কাছে আমার পরিচয়টি অত্যন্ত খারাপ ভাবে প্রকাশ পায়। কাউকে অজথা কটুক্তি না করি। কারও সাথে খারাপ ভাবে কথা না বলি। বরং চেষ্টা করি যাতে পারস্পরিক সম্পর্কের জায়গাটা অত্যন্ত সুদৃঢ় হয়। কখন কিভাবে কথা বলতে হয়? কার সাথে কি কথা বললে সে বিষয়টিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবে এসব বিষয় ভেবেচিন্তে কথা বলা হচ্ছে ব্যাক্তিত্বের প্রকাশ। যা তাকে পরিচয় করিয়ে দেয় সবার সাথে।

আসুন আমরা এমন ভাবে আমাদের কথাগুলো সাজাই যার দ্বারা সমাজ, দেশ ও মানুষ উপকৃত হয়। মানুষের মাঝে এমন কথা রেখে যাই যা আমাদের জন্য বয়ে আনবে সুনাম। যার কথা শোনার জন্য অপেক্ষায় থাকবে হাজারো মানুষ। বিনা প্রয়োজনে কথার দ্বারা হিংসা, বিদ্বেষ কিংবা সম্পর্কের অবনতি না করি। পারিবারিক, সামাজিক কিংবা ব্যাক্তিগত জীবনে সবার সাথে সম্পর্কগুলো হোক বকুল ফুলের মালার মতো। যা দ্বারা কেবল সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে। আর আপনি হয়ে উঠবেন একজন অনন্য মানুষ। যে হবে সেরাদের সেরা।

Risalat Mirbahar
Writer & Editor: Obalardak
E-mail:
 obalardak@gmail.com,
Barishal Sadar, Barishal, Bangladesh
Mobile: +8801516332727 (What's App)
Copyright Ⓒ 2025 । All Right Reserved By Obalardak [Click More]