Hot Widget


Type Here to Get Search Results !

Headline

Notice: “আসুন মাদক ছাড়ি, কলম ধরি, দুর্নীতিমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ি”। To read this website in your country's language, please change the language. Contact us for advertising: +8801516332727 (What's App) Thank you.

একটি সুসন্তান দেশ ও জাতির জন্য গর্বের

মো. রিসালাত মীরবহর।। একটি সুসন্তান গোটা পৃথিবীর জন্য আর্শিবাদ। পৃথিবীর প্রতিটি বাবা-মা চায় তাদের সন্তান যেন মানুষের মতো মানুষ হয়। সে যেন দেশ ও জাতীর কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। আর তাতে যেন তার বাবা-মা গর্ব করে বলতে পারে আমার সন্তান আজ সুুশিক্ষিত হয়ে একজন সত্যিকারের মানুষে পরিণত হয়েছে। একটি সুসন্তান একটি দেশ ও জাতির জন্য গর্বের। আমরা তখনই সফল হতে পারবো যখন আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সত্যিকারের সুসন্তান রেখে যেতে পারবো। 

আমরা জানি একটি সন্তানকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলতে বাবা-মায়ের অবদানের কোন কমতি নেই। তারপরেও যেন আমরা আমাদের সন্তানদের কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষের মতো মানুষ করে তুলতে পারছিনা। এক্ষেত্রে সন্তানের উপর সঠিক তদারকীর অভাব কে দায়ী করলে বিষয়টি অযৌক্তিক বলে মনে হবে না। তাছাড়া সন্তানের বেড়ে ওঠার পিছনে সহপাঠীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রয়েছে বটে।

আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠনের সেচ্ছাসেবক হিসেবে অনেক ছাত্র/ছাত্রীদের নিরালস কাজ করে যেতে দেখেছি। যারা বিনা পারিশ্রমিকে মানব সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করছে। আর বয়ে আনছে দেশ ও জাতীর জন্য কল্যাণ। যার মধ্যে রয়েছে- সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, অসুস্থ্যদের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ ও চিকিৎসা খরচ সংগ্রহ, শীত বস্ত্র বিতরণ, বণ্যার্তদের জন্য সহযোগীতা সহ বিভিন্ন সেবামূূলক কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে অসংখ্য ছাত্র/ছাত্রীরা। এটা আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন যা অত্যন্ত প্রসংশার দাবীদার। এরপরেও সমাজে দেখা যাচ্ছে নানা জটিলতা সহ নানা অনিয়ম। যা আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অশনী সংকেত। কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস আর অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। 

এই কথাটি যখন আপনি আপনার সন্তানকে সঠিক ভাবে বুঝাতে পারবেন, তখন আপনার সন্তান আপনার জন্য সুফল বয়ে আনতে পারবে। বিশেষ করে স্কুল/কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় সে কার সাথে মিশে, কাকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করে কিংবা ভালোবাসে, আপনার অনুপস্থিতিতে সে কোথায় যায়? কি করে? এ বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে। এজন্য সন্তানের সাথে পিতা-মাতার সম্পর্কটা বন্ধুত্বের মতো হওয়া অত্যন্ত জরুরী। আপনি যদি শুরু থেকেই আপনার সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে পারেন তবে সন্তান সঠিক ভাবে বেড়ে উঠবে।

আমরা একটি ছোট উদাহরণ দিতে পারি, যেমন ধরুণ আপনি ধূমপান করেন। এটা আপনার একটি অভ্যাস। এখন এই অভ্যাসটি আপনি আপনার ছোট শিশু বা কিশোর বাচ্চার সামনে সম্পন্ন করলেন। এটা তার জন্য একটি কুশিক্ষায় পরিণত হলো। কিন্তু ধরুণ আপনি যদি আপনার সন্তানকে ভালো কাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে পারেন, তবে আপনার সন্তান ভালো কাজের মধ্যে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে। অর্থাৎ শিশু কিশোরদের মানসিক ভাবে বেড়ে ওঠার পেছনে বাবা-মায়ের যে দায়িত্ব সেটা যদি আপনি সঠিক ভাবে পালন করতে পারেন, তবে ঐ শিশু বা কিশোরা পরবর্তীতে ভালোভাবে সামাজিক ভাবে বেড়ে ওঠতে অনেকটা সক্ষম হবে। 

আমরা প্রায়শই দেখতে পাই কিশোর বয়সে তারা বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। এমনকি তারা কিশোর গ্যাং তৈরি করে বিভিন্ন ভাবে অপরাধ সংঘটিত করছে। ফলে একটি সময় তারা অপরাধ জগতে জায়গা করে নিচ্ছে। এতে করে তারা বিভিন্ন ভাবে জীবনের মূল উদ্দেশ্য থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে ব্যপক প্রভাব ফেলছে। তাই একটি সন্তানকে সুন্দর ভাবে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে তৈরি করতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি তাকে পারিবারিক ও ধর্মীয় শিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে। যা তাকে মানবিক ও সামাজিক ভাবে বেড়ে ওঠতে বেশ সহায়তা করবে। আর একটি সন্তান যদি সত্যিকারের মানবিক ও সামাজিক মানুষ হয়ে ওঠতে পারে তবে তা দেশ ও জাতীর জন্য কল্যাণ তো বটেই বরং তা পিতা-মাতার জন্যও অনেক আনন্দের ও গর্বেরও হয়। 

সেক্ষেত্রে কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে করে সন্তানদের ভবিষ্যৎ বিকাশের ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়। যেমন: সন্তানকে এমন ভাবে গড়ে তুলুন যাতে সে সবার সাথে খুব আন্তরিক হয়ে কথা বলে, সন্তানকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শাসন করা থেকে বিরত থাকুন, সন্তানের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাধান্য দিন, সন্তানের সাথে এমন ব্যবহার করুন যাতে সে আপনার সাথে সুন্দর ব্যবহারে বাধ্য হয়, পড়াশুনার পাশাপাশি তাকে সামাজিক সংগঠনের সাথে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিন। 

যাতে তার কাজে মানুষ উপকৃত হয়। গুরুজনকে সম্মান করতে শিখান, পড়াশুনার পাশাপাশি তার বিনোদনের ব্যবস্থা করুন, মোবাইল কিংবা অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহারে অধিক সতর্ক হউন, ধর্মীয় মূল্যবোধ তৈরিতে সহায়তা করুন। এছাড়া ভালো সহপাঠী নির্বাচনে তাকে পরামর্শ দিন। আদর্শ, নৈতিকতা, সততা আর বন্ধত্বপূর্ণ ব্যবহারে তাকে সর্বদা সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করুন।

মনে রাখবেন ‘আজকের সুসন্তান আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’। পৃথিবীর প্রতিটি সন্তান হোক পিতা-মাতার জন্য গর্বের সেই সাথে দেশ ও জাতীর জন্য বয়ে আনুক সুনাম।

Risalat Mirbahar